বিশ্বসেরা ১০০ আমরা অনেক বিষয়ের উপর আছে এবার তেমন আরো একটি দারুন বিষয় জেনে নেই চলুন। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সারা বিশ্বে যখন লকডাউন এর সবকিছু বন্ধ কাজ নেই, অন্যদিকে নেই খাবার আর মাথা গোঁজার ঠাঁই। এমন দুর্দশার মধ্যে এগিয়ে এলেন রিনা আক্তার। নিজের চেনা কষ্টের অভিজ্ঞতায় ভর করে খাবারের ব্যবস্থা করলেন। তাদের জন্য ড্রপিং সেন্টারে কলিং থাকার ব্যবস্থা এবং প্রতিটি মুহূর্ত নিলে খোঁজখবর।
আরো পড়ুন….
- বিশ্বের অন্যান্য খবর গুলো পড়তে এখানে দেখুন
- খেলা ধুলার সকল আপডেট খবর পেতে এখানে দেখুন
- বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির খবর গুলো পেতে এখানে দেখুন
- করোনা মোকাবেলা ও স্বাস্থ্যের অন্যান্য টিপসগুলো এখান থেকে দেখুন
- এই মুহুর্তের সকল আপডেট খবর গুলো পেতে এই লিংকে ক্লিক করুন
একসময়ের রিনার এমন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিবিসির পক্ষ থেকে চলতি বছর ব্রিটিশ গণমাধ্যমটির বিশ্ব সেরা .১০০ নারীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন রিনা আক্তার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় রিনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তার পাশে ছিলেন কয়েকজন যৌনকর্মী যারা দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় তার সহায়তা পেয়েছিলেন এবং চরম অসহায় অবস্থায় রিনাকে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞতার কথা স্বীকার করেন তারা।
তাদের একজন বলেন, যখন কেউ আমাদের কাছেই আসত না, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিনা আপা। লকডাউনে আমাদের কামাই রোজগার বন্ধ, খাওয়ার ব্যবস্থা নাই, বাসা ভাড়ার টাকা বাকি পড়েছে ২০ হাজার টাকার মত। টাকা দিতে না পারায় যেতে পারি না। রিনা আপা তখন রান্না করে খাওয়াইছেন। এরপর চাল-ডালও দিছেন।
তিনি জানান, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, গুলিস্তান, হাই কোর্ট, নিউ মার্কেট, বাহাদুর শাহ পার্ক, সদরঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন দেড় থেকে দু’শ জনের খাবারের সংস্থান করেছেন। শিক্ষার্থীসহ, সাধারণ মানুষ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় প্রায় পাঁচ মাস লতার মতো এমন ভাসমান খাবার ও বিশ্রামের ব্যবস্থা।
কাজের স্বীকৃতি পাওয়ায় ভাসমান জন্য কাজ করার দায়িত্ব অনুভব করা কথাও বলেন তিনি। “আমার দায়িত্বটা বেড়ে গেল। বিভিন্ন লোক আমার কাছে আসছে, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেছে, মেয়েদের সুবিধা-অসুবিধা জানতেছে, তাহলে আমার দায়িত্বটা বাড়তেছে না?”
বিশ্বসেরা ১০০ মহাত কাজের মত আরো একটি কাজ এটা। করোনাভাইরাসের কারণে দুর্দশার মধ্যে পড়ার কথা জানিয়ে আরেক তারা বলেন, “করোনা যখন শুরু হয়েছে, তখন আমরা ফিল্ড লেভেলে খুবই কষ্টের ভেতরে ছিলাম। যেমন ধরেন, পুলিশ আমাদের ফিল্ডে দাঁড়াতেই দিত না, দু’জন একখানে বসতেও পারতাম না, খাবারের তো অভাবই ছিল।
“আমাদের যে বাসা ছিল, ফিল্ড থেকে বাসায়ও যেতে পারতাম না। কারণ কাজ করতে পারতাম না, টাকা ছিল না।”
রিনার কাছ থেকে সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিছু দিন যাওয়ার পরে উনার যে সংগঠন আছে, তার মাধ্যমে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে চা,লডাল এনে দিছে। তারপর ওনারা বাসায় রান্না করে খাবার এনে প্যাকেট করে করে দিছে।
“কাজ না থাকায় বাসা ভাড়া দিতে না পারায় বাড়িওয়ালারা আমাদের বের করে দিছে। অনেক জায়গায় বাসায় তালা মেরে দিছে, ভাড়া না দিলে জিনিসপত্রও দেবে না। আমরা একেবারে রাস্তায় থাকতেছি, না হয় রিনা আপার ড্রপ-ইন সেন্টারে থাকতেছি।”
কোন এক সময় ছিলেন রিনা আক্তার। সেখান থেকে ‘দুর্জয় নারী সংঘ’ নামক বেসরকারি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়. ভাসমান জন্য তার কাজের সূচনা হয়। লাইটহাউস নামক একটি এনজিওতে যোগ দিয়ে তাদের জন্যই কাজ করছেন।
ওই এনজিওর সঙ্গে থেকে ভাসমান স্বাস্থ্যসেবা, তাদের আইনি সহায়তা, দা’ফন-কা’ফন এবং ড্রপ-ইন সেন্টারে গোসল ও অবস্থানের ব্যবস্থা করতে থাকেন।
লকডাউনে খাবার দেওয়ার চিন্তা মাথায় কীভাবে এল- জানতে চাইলে রিনা বলেন, যখন করোনা শুরু হয়ে গেল, তখন দেখলাম যে, আমাদের ড্রপ-ইন সেন্টারে মেয়েদের যাতায়াত কমে গেছে, কারণ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলছে কিন্তু ওরা তো দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পারে না। মেয়েরা যেহেতু রাস্তায় থাকে, সেহেতু খাবারের সমস্যা। যেহেতু, লোকজন বের হতে পারে নাই, আমাদের মেয়েদের কাছে কোনো লোকজন আসে নাই। কিন্তু না আসলে আমাদের মেয়েরা খাবে কোথা থেকে।
তার ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেখে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, লাইটহাউজ, ওয়ার্কার নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের মতো এনজিও এগিয়ে এল। সহায়তার হাত বাড়িয়ে কেউ দিল চাল-ডাল, কেউ নগদ টাকা আবার কারও কাছ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পেল। বিশ্বসেরা ১০০ কাজের মধ্য এটা পড়েছে যেটা আসলেই একটা উন্নায়ন মুলক কাজ।