আজ আমরা জানবো যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কে এরিস্টটল এর উক্তি বা ধারনা তাহলে চলুন শুরু করা যাক…….যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কে এরিস্টটল কি বলেছেন
আমরা জানি যে যুক্তিবিদ্যা একটি চিন্তার বিজ্ঞান। এর প্রধান আলােচ্য বিষয় হচ্ছে অনুমান বা যুক্তিপদ্ধতি।যুক্তির দুটি দিক আছে- একটি আকারগত দিক, অন্যটি বস্তুগত দিক। দার্শনিক এরিস্টটল সর্বপ্রথম অনুমানের আকারগত দিক নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন এবং যুক্তিবিদ্যার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তুতে অসাধারণ অবদান রাখেন। তাই তিনি যুক্তিবিদ্যার জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এরিস্টটলের মতে—প্রত্যেকটি জাগতিক বস্তুর মধ্যে দুটি দিক আছে। একটি হলাে— বস্তুর উপাদান, অপরটি হলাে বস্তুর আকার। তিনি মনে করেন বস্তুর মধ্যে
সব সময় এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এবং এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া একটি অভ্যন্তরীণ শক্তির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় যেমনঃ
আম বীজ পরিবর্তনের ফলেই আম গাছে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে আম গাছের উপাদান হচ্ছে পরিবর্তনশীল সত্তা আর আকার হচ্ছে অন্তর্নিহিত শক্তি যার নিয়ন্ত্রণে গাছটি পরিবর্তিত হয়।
অনুমনের ক্ষেত্রে এরিস্টটলালের শ্রেষ্ঠ অবদান হচ্ছে তার সহানুমান (Syllogism) সম্বন্ধে ধারণা প্রবর্তন।
সহনুমানের একটি যুক্তি তিনটি অংশ দ্বারা গঠিত- প্রধান আশ্রয় বাক্য অপ্রধান আশ্রয় বাক্য ও সিদ্ধান্ত।
যেমনঃ

- সকল মানুষ হয় মরণশীল
- সকল গ্রিকবাসী হয় মানুষ
- সুতরাং সকল গ্রীকবাসী হয় মরণশীল
- কোন গ্রীক বাসি নয় কালো
- কিছু মানুষ হয় গ্রীকবাসী
- কিছু মানুষ নয় কাল
এ ধরন্মে যুক্তির বৈধতা বিচারের জন্য তিনি আবার একটি সূত্র উদ্ভাবন করেছেন যা এরিস্টটলের সূত্র
[Aristotle’s Dicturm) নামে পরিচিত। সূত্র অনুসারে কোনাে শ্রেণী সম্বন্ধে কোনো কথা সত্য হলে তা ঐ
শ্রেণীর অন্তর্গত যে কোনাে ব্যক্তি বা বস্তু সৎ সত্য হবে। আবার, কোনাে শ্রেণী সম্বন্ধে কোনাে কথা অসত্য হলে
তা ঐ শ্রেণীর অন্তর্গত যে কোনাে ব্যক্তি বা বস্তু সম্বন্ধে অসত্য হবে।এরিস্টটলের পরবর্তী সময়ে সহানুমানের যুক্তির বৈধতা বিচারের জন্য বহু নিয়ম-কানুন আবিষ্কৃত হয়েছে।তবুও তার সূত্রের গুরুত্ব একটুও ম্লান হয়নি। সূত্রটি বিশ্লেষণ করলে এর মধ্যেই সহানুমানের গঠন, বৈশিষ্ট্য ও নিয়মাবলির সন্ধান পাওয়া যায়। কাজেই এটি সকল সহানুমানের ভিত্তি স্বরূপ।এরিস্টটল যুক্তিবিদ্যাকে একটি কলা বিদ্যা বলে মনে করেন। তার মতে কলা বিদ্যা বহু সত্তার মধ্যে পরিবর্তন ঘটায়। একজন কলাবিদ কোনাে বস্তুর নিজস্ব সত্তাকে পরিবর্তন করে অপর একটি বস্তুরূপে পুনর্গঠন করেন। যেমন:একজন শিল্পী একটি মূর্তি গড়ার সময় মাটির নিজ সত্তাকে পরিবর্তন করে তাতে একটি মূর্তির রূপ দান করেন।এরিস্টটল কার্য-কারণ সম্পর্কে যে মতবাদ দিয়েছেন অনেকটাই বিজ্ঞানসম্মত। তাঁর মতে কারণ চতুরবিদ, যথা-
উপাদান কারণ
আকার কারণ
নিমিত্ত কারণ ও উদ্দেশ্য কারণ।
আরো পড়ুনঃ
- নদী ভাঙ্গন কি ? বাংলাদেশে নদী ভাঙ্গনের প্রধান কারণ
- নদীর বিভিন্ন কার্য ও তার বর্ণনা নদী কি কি কাজে আসে
উদাহরণসরূপঃ একজন শিল্পী যখন মাটি দিয়ে একটি মূর্তি তৈরি করেন, তখন এর মধ্যে চার প্রকার কারণ লক্ষ্য করা যায়। শিল্পী যে উপাদান (অর্থাৎ মাটি নিয়ে স্মৃতি তৈরি করেন তাকে বলে উপাদান কারণ। তিনি মূর্তি গড়ার সময় যে ধারণা বা নকশা মাটির উপর প্রয়োগ করেন তাকে বলে আকারগত কারণ। মূর্তি তৈরির সময় শিল্পী যে দৈহিক শক্তি বা কৌশল প্রয়ােগ করেন তাকে বলে নিমিত কারণ। আর যে উদ্দেশ্য বা সংকল্প নিয়ে তিনি মূর্তিটি তৈরি করেন তাকে বলে উদ্দেশ্য কারণ।অনুমান সকান্ত সহানুমান প্রক্রিয়া প্রবর্তন করতে গিয়ে এরিস্টটল এর সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয় যথা
পদ-Term
সংযােজক -Copula
যুক্তিবাক্য -Preposition
বিধেয়ক-Prollecable ইত্যাদি সম্বন্ধে ধারণা দেন। তার মতে বিধেয়ক চার প্রকার। যথা-
জাতি (Genus), সংগা (Definition), উপলক্ষণ ও অবন্তর লক্ষণ (Accidens)। তার এই ধারণা দীর্ঘকাল ধরে, এমনকি সারা মধ্যযুগ জুড়ে অপরিবর্তিত অবস্থা সমাদৃত হচ্ছে। পরবর্তীকালে কিছুটা পরিবর্তিত হলেও আজ পর্যন্ত অনুমান সম্পর্কিত তার চিন্তাধারাকে যথেষ্ট সম্মানের চােখে দেখা হয় এবং তাকেই যৌক্তিক চিন্তার স্রষ্টারূপে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়।
উপরুক্ত লেখার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছে এরিস্টটল এর উক্তি যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কে এরিস্টটলের ধারনা আশা করি বুঝতে পেরেছেন। আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ
Pingback: মিশ্র অর্থনীতি কি? মিশ্র অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলাে | Explain BD
Pingback: সুনামি কি? সুনামির কারণ ও ফলাফল বর্ণনা | ভূগোল | Explain BD
Pingback: অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষার রুটিন ২০২১ | ব্যবস্থাপনা বিভাগ | Explain BD